জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মঙ্গলবার, ৩১ মে, ২০১১

তোমার স্বর্গ

শুভ্র শূন্য কাগজ
যে কালো দাগ লেগে আছে সে শুধুই কলমের ছায়া
কাগজের শুভ্র বিশাল প্রান্তরে একজন দিক খুঁজে না পায়
ভাবনার ধূমকেতু ভেঙ্গে পড়ে একদিক-সেদিক
তারপর সব জলোচ্ছ্বাসের তাণ্ডবে ভেসে বহুদূর

তোমার স্বর্গ আমাকে দুরে ঠেলে দেয়
ঠেলে দেয় কাঁচ ভাঙ্গা স্বপ্নের পথে
তোমার স্বর্গ আমাকে ভেঙ্গে দিতে চায়
শুধু চায় দুরে ঠেলে দিতে

নরকের অনলে তপ্ত পাথুরে পথে
শুনেছি সহস্র ভাঙ্গা স্বপ্ন নাকি জন্ম দেয় শত গল্পের
আমাদের প্রিয় অতীত জড়ানো সুতোয়;
শুনেছি আকর্ষণ সূত্রের নাকি কোন ছন্দ নেই
দাগী অপরাধী ভালবাসা অকারণ বিচারের কাঠগড়ায়!

তোমার স্বর্গ আমাকে দুরে ঠেলে দেয়
ঠেলে দেয় কাঁচ ভাঙ্গা স্বপ্নের পথে
তোমার স্বর্গ আমাকে ভেঙ্গে দিতে চায়
শুধু চায় দুরে ঠেলে দিতে!

সোমবার, ৩০ মে, ২০১১

স্বপ্ন-যন্ত্রে তৈরি হারানো ভবিষ্যৎ

একটা সময় ছিল
আমার প্রতিবিম্ব ছিলাম আমিই
ছিল একান্ত ব্যক্তিগত স্বপ্ন বানাবার যন্ত্র
কত যে বানিয়েছি বৈশাখী মেলার
হাওয়াই-মিঠাইর মত রঙিন স্বপ্ন- হিসেব নেই
শরৎকালের ঘুড়ির ডানায় বেধে স্বপ্ন ওড়াতাম
উড়ন্ত শহুরে দাড় কাকেদের সাথে পাল্লা দিয়ে  
বাবার পোষা গিরিবাজ পায়রাদের মেঘ ছুতে দেখে
উড়তে খুব লোভ হত
তখন আমি ছাদের রেলিঙে দুহাত মেলে দাড়িয়ে
ঠিক যেন বুনো পাখিদের মত আকাশে ডানা মেলে

অতীতে কত যে ভবিষ্যৎ গড়েছি
মহাশূন্যের যেখানে অতীত সময় ঝরনার মত ঝরে ঝরে
একটা সময় আর সময় থেকে মহাকাল
যেন পুরো একটা নদী আর নদী থেকে মহাসমুদ্র
সেখানের সময়-সমুদ্রে ঢেউ হয়ে আছে আমার হারানো ভবিষ্যৎ
সেই সমুদ্র-তীরে যাওয়া বারণ
আমি তাই দূর হতে দুরবিন হাতে চোখ রেখে দেখি
আমার অতীত: আমার স্বপ্ন-যন্ত্রে তৈরি হারানো ভবিষ্যৎ!

শনিবার, ২৮ মে, ২০১১

কৃত্রিম মুক্তি

জ্বলন্ত কল্কির নিচের শুভ্র ধোয়াটে অন্ধকার
আমি মিশে যেতে চাই!
অজ্ঞান অবচেতনার শ্বাসনালী হতে ফুসফুস-
ক্রমান্বয়ে দুষিত ধমনী বেয়ে চলে নদী
জল-রুপী উষ্ণ কালচে রক্ত খোজে মুক্তি
তবুও ধমনির শাসনে শৃঙ্খলাবদ্ধ রক্তের সঞ্চালন
স্রোত বয়ে যায় এই পাপিষ্ঠ দেহ জুড়ে
অভিশপ্ত হৃদপিণ্ডের অবশিষ্ট নেই পবিত্রতা
শুভ্র ধোয়ায় বিষাক্ত রক্তের হয়না হৃদপিণ্ডে পরিশোধন
একদা উর্বর এই মস্তিষ্কে আজ মৃত কোষদের সারিবদ্ধ লাশ
কিছু অদ্ভুত থমথমে নিশ্চুপ হাহাকার
কিংকর্তব্ববিমুর দৃষ্টি গন্তব্য-হীন নিরেট কালো
অথবা চেয়ে আছে অদেখা কোন সময়ের দৃশ্য-পথে!

শ্বাসনালী জুড়ে দমের ছন্দপতন
ফুসফুসও যেন আজ ক্লান্ত
বিশ্রাম খোজে খানিকের
নিস্তেজ দেহ- এই কুঠুরির এক কোনে আশ্রিত
এখন এখানে কোন বাস্তবতা নেই
কল্কির সূর্য-রোষে পুড়ে সব বাষ্প!
আত্মার তো এটাই কামনা ছিল
সে জানে তার অবকাশ নেই, জীবনের অন্ধকার অধ্যায় হতে
বাস্তবতার নিয়ত রোষানল
অতীতের শকুন-ঠোটে ক্ষত হওয়া প্রতিদিন
তবুও অভিশপ্ত এই আত্মা খোজে
কল্কির সূর্য জ্বেলে ধোয়াটে নগরে ক্ষণিকের কৃত্রিম মুক্তি!!!


শুক্রবার, ২৭ মে, ২০১১

অপেক্ষায়

ঘরের এই আলোয় ঘ্রাণ মিশে নেই তোমার
শুধু আছে তোমার না থাকার গোমট কষ্ট
আর তোমার অজস্র স্মৃতি-

স্পর্শ করা প্রতিটি ধুলোকনায়
তোমার স্বাক্ষর নেই
তবুও যেন আছে- তুমি আছ
তোমার ব্যবহার্য আর আগলে রাখা প্রতিটি স্মৃতি-ছবিতে!

দেহ জুড়ে প্রাণহীন ঘুমের গন্ধ-
অনেকটা দীর্ঘ ঘুম
তারপর অজস্র-কাল দেখা হবে না- কথা হবে না
তারপর হটাত হটাত ঠিকই দেখা মিলবে
পুরনো ছবির দিনগুলির মতই সব স্বচ্ছ
অথচ সেটা শুধুই ঘোরলাগা স্বপ্নে

স্বপ্ন-ঘোরেই হৃদপিণ্ড কাঁপানো, শিরায়-উপশিরায়
অস্থিরতা জাগানো অদম্য আকুলতা--  একটু স্পষ্টতা,
একটু তোমাকে ছুঁয়ে দেখা, আর একটু মুহূর্ত তোমার সাথে কথা বলার!
তারপর সব হতাশায় ভাঙ্গবে ঘুম
আমি জোর করে তবুও চোখ বুজি
জেনে স্বপ্ন তো সত্যি নয়
স্বপ্নের অস্পষ্টতায় তাই তোমার ইচ্ছেগুলো অজানাই রয়ে যায়

কথা ছিল আরও অনেক কথা হবে
তোমার যে যাবার তাড়া ছিল
তা তো দেখিনি তোমার চোখে
কতকাল হয়তঃ অবুঝে তোমাকে কষ্ট দিয়েছি-
ক্ষমা চাইবার মুহূর্ত পর্যন্ত তুমি অপেক্ষা করলে না?
যাত্রা পূর্বে না বিদায় নেবার নিয়ম?
তোমার আঙ্গুল ধরে হাটতে শেখা আমি
বল তো কেমন করে এতটাকাল পাড়ি দেব?
বল তো কেন সেখানে যাবার জন্য তোমার এত ব্যাকুলতা?
যেখানে তুমি যাওনি কখনও; যেখানে আমরা কেউ নেই?
বিধাতার প্রিয় হয়ে চলে গিয়েছ তুমি
আমাদের প্রিয় তো তুমি সবসময়ই ছিলে
তবে আর একটু কাল কি থেকে যেতে পারতে না?

শুনেছি ও পুস্তকে বর্ণিত আছে
তা জেনে বেধেছি বিশ্বশাস
বিধাতার অঙ্গীকারে একদিন ঠিকই তুমি আবার বাস্তব,
শুনেছি ও'পার ঠিক যেন সব প্রিয় সেইসব দিনের মত!
....তাই অপেক্ষায় রইলাম!

(উৎসর্গ: প্রিয় বাবা)