জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

বুধবার, ১৭ আগস্ট, ২০১১

শেষের কবিতা

এভাবে সব শেষ হয়
প্রচণ্ড বিস্ফোরণে কোন ধ্বংস নয়
পরন্তু একটা হতাশার দীর্ঘশ্বাসে
অবাক দৃষ্টির কোণে
এক ফোটা অশ্রু জলে

এভাবে সব শেষ হয়
অনেক নিস্তব্ধতার কোলাহলে
আকাঙ্ক্ষার আয়না-জলে
জন্ম নেয় অনিচ্ছা-জলজ তরু
অতঃপর রং বদলায় এই জলজ প্রান্তর
অথচ কোন বিস্ফোরণে নয়

দ্বিপ্রহরে বিষণ্ণ ঘুমে
এই ঘরে রৌদ্র হয় অপ্রাসঙ্গিক
শেষ বিকেলে আকাশের নিয়ত রক্তক্ষরণে
মৃত্যু হয় আলোকিত পার্থিব একটি দিনের
চিত্তক্ষোভে থাকা কেউ জানেও না কখন
বিষের মত গগনে অন্ধকার মিশে যায়

তবু কোন ধ্বংসে নয়
নয় কোন বীভৎস অথবা স্নিগ্ধ বিস্ফোরণে
কোন অপার্থিব ক্ষোভে নয়-
শাশ্বত হতাশায়;
এভাবে একদিন সব শেষ হয়ে যায়



সোমবার, ৮ আগস্ট, ২০১১

টেবিল-ল্যাম্প ভাবনা

সময় বদলাবে কালের বালি-ঘড়ি
তবে আমাকে বদলাবে কিনা জানি না
শুনেছি মেঘেদের দ্বন্দ্বে হয় বজ্রপাত
আর বজ্রপাতের পরের নিস্তব্ধতা
আমাকে বার বার জানিয়ে গেছে
"মানুষ অবশেষে একা"
জিগ্যেস করা হয়নি কাউকে
আসলেই কি তাই?
বাতাসের কৌতুকে হাসিতে ফেটে পরে
দুলতে থাকা সারি-সারি বৃক্ষ
বালু মাঠের পরে ওই খালে
এক ঝাঁক পানকৌড়ির মিছিল 
কেউ তো একা নয়!
তবে শুধু মানুষ কেন?
হয়তোবা আমিই ভুল শুনেছি
এই ল্যাম্পপোস্ট-বৃক্ষের নিচে
ভাসমান দোকান গুলোয় কেউ তো একা না
ফুটপাত-চেয়ারে বসে থাকা সারি-সারি মানুষ
বিলবোর্ড বিজ্ঞাপনে হাস্যজ্জল মুখ
একটা চায়ের পেয়ালা ঘিরে সমাবেশ
কেউ একা না; কিন্তু শুধু আমি
এই জনস্রোত ঠেলে যদি হাত বাড়াই
তবে জানি কেউ নেই
আমার কোন বন্ধু নেই!

প্রতিশ্রুতি

মহাজগতের কোন এক সহস্র বর্ষ পূর্তি ক্ষণে
উপবৃত্ত কক্ষপথের অবাধ্য হয়ে
আকাশগঙ্গা পাড়ি দিয়ে
উন্মত্ত ধূমকেতু আসবে পৃথিবীকে ভালোবেসে

আমি আসব একদিন
সেদিন আমার গালে তোমার অনন্য চুম্বন
এঁকে জানিয়ে দেবে আমি আর কারো হতে পারি না

জলজ ঘাসের ওই মাঠে
একলা ডাহুকের কান্নার সাথে আর মিল খুঁজতে চাই না
নিষ্প্রভতায় পেয়ে বসা শশীর সাথে
হাতে চকচকে গ্লাসের রাত্রি নিয়ে বসে থাকতে চাই না

ওই আবীর ছেয়ে যাওয়া অভ্রে আমি ধুসর মেনে নিতে পারি না
প্রিয় কৃষ্ণচূড়ার গুচ্ছে শুঁয়াপোকার অবাধ বিচারণ সইব না
জানি তুমিও করবে অন্য আলোয় স্বীয় ছায়াকে অস্বীকার

জেনে রেখো আমি আসব এই প্রহর ফুরবার আগে
আবারও জেনে নিতে আমি অন্য কারো হতে পারি না

শনিবার, ৬ আগস্ট, ২০১১

নিষ্প্রভতা

এখন শান্তভাবে আমি অপেক্ষা করছি
আমার ব্যক্তিত্বের নাটকীয় কুগ্রহের জন্য;
আবারও প্রাণবন্ত হবার অপেক্ষায়
এবং আনন্দময় ও স্বাভাবিক

শহর ধুসর হয়
বাদামী ও হলুদ লেগে যায় গাছে
তুষার আর হাসির আকাশ
সবসময় ছোট হয়ে আসে
হয় কম আনন্দময়
শুধুই গাঢ় নয়; ঠিক ধূসরও নয়
হতে পারে এটা বছরের সবথেকে অনুষ্ণ দিন

এসব নিয়ে সে কি ভাবে?
মানে বোঝাতে চাইছি- আমি;
আমি এসব নিয়ে কি ভাবি?
যদি এসব আমার চিন্তায়
তবে আমি কি আবারও আমার?

(ফ্র্যান্ক ও'হেরার "মায়াকভস্কি" কবিতার অবলম্বনে)

শুক্রবার, ৫ আগস্ট, ২০১১

মুনে খায়েশ জাগে পেরেম করবার

যখন দেখি
রিক্সার হুড তোলা- ভিতরে কপোত-কপতি
চিড়িয়াখানায় বান্দর উকুন বাছে বান্দরনীর
বৃষ্টি তে ভিজ্জা ইলেকট্রিক খাম্বার উপড়
একটা চড়ুই বেহুদা ঘষা-ঘষি করে আর একটা চড়ুইর লগে
অথবা মাইনষের একই সিন পার্কের বেঞ্চিতে
যখন দেখি
বৈদেশি গেঞ্জি কিনতে আমি একলা শপিং মলে
ছুডো-ছুডো পুলাপাইন হাত ধইরা
ঢেলা-ঢেলি কইরা হেইলা-দুইলা হাটে
হাসি আসে না তবুও দাঁতের দোকান খুইলা হাসে 
যখন দেখি
মোবাইলে ইয়াত্তু ব্যালেন্স
অথচ কল দেউনের কেউ নাই
বিজ্ঞাপনের মিথ্যা সিন বিশ্বাস খাইয়া আমার মুখে প্রসাধনী
অথচ এই বদনে হাত বুলানোর মত কোন সুন্দরী নাই
যখন দেখি
গায়কের বিশেষ কারো জইন্য স্বরনালি ছিড়ার উপক্রম
ভিলেন পিডাইতে পিডাইতে নায়কের হাতে ঝিনঝি ধইরা গেছে
পিছে তারতম্য পূর্ণ আবহ-সঙ্গীত বাজে আর তার লগে
নায়কের আগমনে নাইকা ট্যারা নয়নে মুচকি হাসি 
যখন দেখি
ভ্যালেন্টাইন ডে তে "ভালবাসা দিবস শুধু প্রেমিক-প্রেমিকার না"
এই লেকচার দিতে দিতে মুখে জজবা উঠানো লাগে
গ্রুপের একমাত্র ক্যাবলা বন্ধুটাও যখন আড্ডা ছাইরা
অজ্ঞাত রূপসীর লগে ফিসির-ফুসুর আর হি হি কইরা হাসে
যখন দেখি
এইসব দেইখ্যা চুপচাপ নিশ্বাস ফেলি
নির্মলেন্দুর "তোমার চোখ এতো লাল কেন" কবিতাটা পড়ি
যদিও জানি না কেমনে কি
তবুও তখুন মুনে খায়েশ জাগে পেরেম করবার!


বুধবার, ৩ আগস্ট, ২০১১

অশিষ্ট

ব্যর্থতা, অভাব, শূন্য ঘর
এইসব আমাদের বাচতে শেখায়
ঝরা পাতা ধরে আঁকড়ে থাকা পিপড়া
প্রবল স্রোতের সাথে যুদ্ধ করে-
এইসব আমাদের লড়াই শেখায়

প্রয়োজন আমাদের রুঢ় হতে শেখায়,
শেখায় অকারণে গুড়িয়ে দিতে পিপড়ার রাজ্য;
ভেঙ্গে দিতে মমতায় গড়া চড়ুই পাখির বাসা
প্রয়োজন আমাদের অশুভ শেখায়
আর অশুভ যদি দেয় মুক্তি
তবে কি এই সামুদ্রিক ঝর,
তান্ডব প্রিয় কালবৈশাখ, রাগে কম্পমান ভূমিকম্প,
রক্ত হিম করে দেয়া রাত্রির জন্য শুধুই কি আমি দায়ী?
উষ্ণ বায়ুর সাথে শীতল বায়ুর অযথা মৈথুন,
ভূপৃষ্ঠে হটাত কোন শিলা-চ্যুতি, নিন্মচাপ কিংবা,
সূর্যের অবহেলা এইসব কি কারো নজরে পড়ে না?
তবে কেন শুধু আমার বখে যাওয়া সময়ই
শেকলে বন্ধী হয়ে অপবাদের পাথর তলে?

প্রয়োজন মগজ ঢেকে দেয় শেওলার মতন
উন্মত্ত করে তোলে শিকারি নেকড়ের মতন
বাঘের থাবায় অথবা গোখরার বিষে
আমার ভেতরের দানব
আমার অস্তিত্ব হারিয়ে যেতে দেবে না
জীবন-জঙ্গলে মৃগের আর্তচিত্কারে
রক্ত-স্নান করে হলেও সে আমাকে বাঁচাবে

গিয়ানজাম

প্যাডে জানি কেমুন ব্যথা অনুভব হইতছে
ডাকতর কহিলেন;
"প্রকৃতির সহিত যোগাযোগ উন্নত করেতে হইবেক"
অতঃপর কোষ্ঠকাঠিন্ন্যের ঔষধ গিলিলাম
উহাতে সিংহাসনে বসিবার মাত্রা বাড়িল শুধু
তবুও প্যাড বেদনার উপশম হইলো না
নিতান্তই হতাশ হৈয়া গেলাম বাতাস খাইতে
তখনই আমার উপড় নাজিল হইলো এক জ্ঞানভান্ডার
বলিল; "কি হয়েছে দাদা"
জানি উত্তর না পাউয়া পর্যন্ত শ্যালকের পুত্র থামিবে না
ঘ্যানতানো ঠেকাইতে তাই পুরা সিন তর্জমা করিলাম
শুনিয়া সে দন্তের দোকান খুলিয়া কহিল:
"প্রেম হইয়াছে.... কবিতা লিখেন, উপশম পাইবেন"
বুঝলাম; আমারে কুত্তায় কামড়াইছে!